শরীয়তপুর প্রতিনিধি ॥
শরীয়তপুর পৌর এলাকার ধানুকা মৌজায় দেবোত্তের মিথ্যা নাম করে নিলাম খরিদ করা রেকর্ডীয় জমি জবর দখল করার পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করে বুধবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক ভুক্তভোগী পরিবার। তাদের দাবী ঐ জমি মন্দিরের নামে কোন রেকর্ড বা কাগজপত্র নেই। অন্যায় ভাবে তারা এ জমি মন্দিরের বলে দাবী করে জমির মালিক পরিবারকে হয়রানি করছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষথেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, শরীয়তপুর পৌর এলাকার ৮০ নং ধানুকা মৌজার আরএস ৮৪০ নং খতিয়ানের ১০৭৬ নং দাগে দশমিক ৮৯ শতাংশ জমি (পুকুর) আরএস রেকর্ডে প্রমথ ভট্রাচার্য গংদের নামে রয়েছে। এ জমিটি গোসাইর দীঘি নামে পরিচিত থাকলে ও গোসাইর দীঘি বলতে এসএ ও আরএস পর্চায় কোন নাম নেই। এস এ জরিপে আরএস রেকর্ডের ধারাবাহিকতায় খাজনা অংশে ২টাকা ৫০ পয়সা হিসেবে লিপিবদ্ধ হয় এবং এসএ পর্চায় ব্রাম্মর বা দেবোত্তর লিপিবদ্ধ হয়নি।
এসএ রেকর্ডীয় মালিকগন সরকারের খাজনা বা কর পরিশোধ না করায় তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান সরকারের ২১টাকা ছয় আনা খাজনা বাকি পড়লে তৎকালীন ফরিদপুর জেলার সার্টিফিকেট আদালতে ১৯৫৭-৫৮ সালের ৩৩৫-ডি মোকদ্দমার উদ্ভব হয়। এ সময় ধানুকা এলাকার আঃ রশিদ ঢালির পূত্র আঃ লতিফ ঢালির নামে উকিল নিযুক্তির মাধ্যমে রামেস চন্দ্র মূখার্জি দ্বারা প্রকাশ্য নিলামে অংশ গ্রহন করে ১৯৫৮ সালের ৩০ এপ্রিল উক্ত জমি নিলাম খরিদ করেন।ঐ সময় সরকারে বকেয়া খাজনা ২১ টাকা ছয় আনা পরিশোধ করে বয়নামা ও ডিসিআর গ্রহন কওে ১৯৫৯ সালের ১৯ জুন দখল বুঝে নেন।
এর পর থেকে আঃ লতিফ ঢালি ঐ পুকুরে মাছ চাষ করে ভোগ দখল করে আসছেন। জমিটি ১/১ খতিয়ান ভুক্ত (খ-শ্রেণী) ভিপি তালিকা অর্নÍভুক্ত থাকায় ২০১৪-১৫ সালে সরকারী সার্কুলার অনুযায়ী এক আবেদনের মাধ্যমে দশমিক ৮৯ শতাংশ (পুকুর) জমি ভিপি তালিকা থেকে অবমুক্ত করে আলাদা ভাবে জমা ভাগ করে নিজ নামে নামজারি করে নেয় আঃ লতিফ ঢালি। যার খতিয়ান নং ১০২৩ এবং দাগ নং ১১৭৭।
তিনি ২০২৩ সাল পর্যন্ত খাজনা পরিশোধ করেছেন। সম্প্রতি তিনি পুকুটি বালুদিয়ে ভরাট করেছেন। এমতবস্থায় দীর্ঘ ৬৬-৬৭ বছর পরে সমীর কুমার দে নামে এক লোক ধানুকা মনসাবাড়ি মন্দিরের নামে এ সম্পত্তি দাবী করে আঃ লতিফ ঢালির নামীয় নামজারি বাতিল চেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গত ৩সেপ্টেম্বর অভিযোগ দায়ের করেন। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুদ্দিন গিয়াস ভুক্তভোগী আঃ লতিফ ঢালির কাগজপত্র কোন তোয়াক্কা না করে অন্যায় ভাবে গত ১০ সেপ্টেম্বর আঃ লতিফ ঢালির নামীয় নামজারি বাতিল করার আদেশ করে ঐ জমি বেচাকেনা বন্ধের নির্দেশ দেন।
এর পরদিন ঐ জমিতেজেলা প্রশাসনের বরাত দিয়ে ৫/৬টি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়। উপায়ান্ত না পেয়ে আঃ লতিফ ঢালি ১১ সেপ্টেম্বর সহকারী জজ আদালতে (চিকন্দি) মামলা দয়ের করেন। বর্তমানে ভুক্তভোগী পরিবার টি আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন ও ন্যায় বিচারের আশায় বুধবার সকাল ১১টায় আঃ লতিফ ঢালি তার নিজবাড়ি ধানুকায় এক সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেছেন তার পরিবার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আঃ লতিফ ঢালির স্ত্রী রোকেয়া বেগম,ছেলে কামাল ঢালি,কামালের স্ত্রী মাকসুদা আকতার,লতিফ ঢালির মেয়ে ঝুমুর আকতার প্রমূখ।